আগামীকাল ঈদের ছুটি, খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে রওনা হবো গ্রামে। কতোদিন মায়ের সাথে দ্যাখা হয় না। মা জানি কতোটা অস্থির হয়ে পথ গুনছে প্রতিদিন। মোবাইলে কথা বললেই মা কাদুকাদু স্বরে জিজ্ঞেস করে খোকা তোর ছুটি হবে কোনদিন? কতোদিন তোর দুষ্টুমিতে বিরক্ত হই না। তোর দুষ্টুমি খুব মিস করি।
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে রাস্তা ভুল করে কখন যে মাঝ মাঠে চলে এসেছে বুঝতেই পারেনি নিতু। কলেজ মাঠটি ক্লাসরুমের সামনে হয়ে ভালোই হয়েছে, তা না হলে যে কি হতো কে জানে। চৈত্রের খবর নেই কিন্তু একি রোদ্দুর, মুখ মন্ডল জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। আকাশের দিকে তাকিয়ে এমনটাই বলতে ছিলো নিতু। বা হাত উঁচু করে যেন প্রাচীর তৈরী করেছে, রোদ্দুর দহন একটু হলেও সহ্য হচ্ছে নিতুর। মাঠ পেরিয়ে সোজা ছাত্র হোস্টেলের সম্মুখে।
রুমে ঢুকতেই অবাক নিতু, ওর আগেই চলে এসেছে বাকি রুমমেটরা, সবাই ওর জন্য অপেক্ষা করছে, নিজেদের পরিকল্পনা শেয়ার করবে। নিতুর বন্ধুদের মাঝে দূরের বন্ধু ফেরদৌস আর রিপন। নিতু আর বাবুর টিকেট আগেই কেটে রেখেছে। কিন্তু ফেরদৌস আর রিপন টিকেট পায়নি, ভেঙে ভেঙে যাবে, যখন যে গাড়ি পায়। ফেরদৌস, রিপন চল এখানে এভাবে কথা বলে লাভ নেই, দেখছিস না একজন টেবিল ছেড়ে উঠতেই চায় না কথাগুল নিতু বলেই উঠে দাঁড়ালো। ওর কি বাড়ি ঘর নেই, বাবা-মা নেই? এভাবে বলিস ক্যানো রে, দাঁড়া আমি কথা বলি, এমনিতেই ও সব কথার জবাব দেয়না তবুও জিজ্ঞেস করি বলেই ফেরদৌস অভ্র’র কাছে গেলো।
অভ্র তুই বাড়ি যাবি না, আমরা সবাই যাবো, আনন্দ করছি আর তুই টেবিল ছেড়ে উঠছিসই না। তোর সমস্যা কি? প্রশ্নের তো কোনো জবাবই দিতে চাস না। কথা শেষ করতে না করতেই নিতু বলে উঠলো, আরে ও তো একটা প্রতিবন্ধী। কোত্থেকে যে আসে এসব, আর ছাত্রাবাসে অন্যান্য রুম থাকতে আমাদের রুমেই এসে পড়লো এইডা……… অত্যাচার তো কম করিনি তবুও কোনো প্রতিবাদ নেই, ছাড় তো, ওর সাথে কথা বলে লাভ নেই। তার চেয়ে চল আমরা সবাই আজ ঘুরতে বের হই, কিছু কেনা-কাটাও পারলে করে ফেললাম। খুব ভোরেই রওনা হবো………নিতু, ফেরদৌস, বাবু, রিপন ঘুরতে বের হয়ে গেলো, যাওয়ার আগে অভ্রকে বলে গেলো..ঘর পরিস্কার করে রাখবি, এসে যেনো কোনো ময়লা না দেখি।
–চলবে