বুধবার , ২ অক্টোবর ২০১৯ | ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. article
  2. Artist
  3. কবিতা
  4. কলাম
  5. গল্প
  6. গুণীজন

সংগীত শিল্পী জেমস্

প্রতিবেদক
রুদ্র আমিন
অক্টোবর ২, ২০১৯ ১২:৫৭ অপরাহ্ণ

গুরু জেমস্ এর ৫৫তম জন্মবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা। আজ ২রা অক্টোবর, ১৯৬৪ সালে উত্তর বঙ্গের নওগাঁ জেলার পত্নীতলায় জন্মগ্রহণ করেন সংগীত শিল্পী জেমস্। পুরো নাম ফারুক Mahfuz Anam James। তাঁর বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবি। সেই সুবাধে ছোট বেলা থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকতে হয়েছে। তাঁর বাবা যখন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারমান, তখন সেই চট্টগ্রাম থেকেই জেমসের সঙ্গীত জীবনের পাগলামি শুরু।

শিল্পী জেমসকে কিছুটা অন্তর্মুখী মনে হলেও ছেলেবেলায় ভীষণ দুরন্ত ছিলেন তিনি। শৈশবে সেভাবে গানের সাথে জড়িত ছিলেন না, মূলত কলেজে থাকা অবস্থাতেই গানের ব্যাপারে ভীষণ আগ্রহী হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু বাবা মোজাম্মেল হক কিংবা মা জাহানারা খাতুন কেউই চাননি যে তাদের ছেলে গানের দলে যুক্ত হোক। বাবা চাইতেন তারা ছেলেও তার মতোই সরকারি উঁচু পদে কর্মরত হবে। ৯ম শ্রেণী পড়া অবস্থায় বাবা তাঁর বখে যাওয়া সন্তানকে একদিন ঘর থেকে বের করে দেয়। আশ্রয় নেয় ‘আজিজ বডিং এ”! সেই সময় চট্টগ্রামের “আজিজ বোর্ডিং” হয় তার গানের কারখানা। জেমসের উপর ক্ষুব্ধ থাকা তাঁর সেই স্বর্গীয় পিতা নিশ্চয় আজ স্বর্গ থেকে ছেলের সফলতা দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। তিনি যাকে শিক্ষিত করে তাঁর মতো বড় কোন সরকারী কর্মকর্তা বানাতে চেয়েছিলেন, আজ হয়তো তার সেই দুঃখ নেই। কারন তার ছেলে আজ দেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের গুরু হয়ে সমগ্র উপমহাদেশে সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। ১৯৮৭ সালে বের হয় জেমস এর প্রথম একক অ্যালবাম “অনন্যা”। যার সবগুলো গান ছিল ব্যতিক্রম। গানগুলোতে ছিল সদ্য টগবগে এক তরুনের মিষ্টি মধুর পরিশীলিত সুর।

১৯৮৮ সালে জেমস চট্টগ্রামের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ফিলিংস’ এ যোগ দেন। তখন কুমার বিশ্বজিৎ বিহীন ‘ফিলিংস’ হয়ে উঠেছিলো দিশেহারা। সে সময় ঘর ছাড়া জেমস যোগ দেয় ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডে। ব্যান্ডের অনুশীলন থেকে শুরু করে থাকা, খাওয়া সব হতো সেই “আজিজ বোর্ডিং”। সেই এক কামরায় সব ব্যান্ড সদস্যদের কত বিনিদ্র রাত কেটেছে, শুধু গান তৈরির নেশায়! ১৯৮৯ সালে বের হয় “ফিলিংস’ এর ১ম অ্যালবাম “স্টেশন রোড”। সেই অ্যালবামের “ঝর্না থেকে নদী”, “স্টেশন রোড” “দুঃখ কেন কররে মন” “আমায় যেতে দাও” “রুপসাগরে ঝলক মারিয়া” “সত্যই সুন্দর” সহ সবগুলো গানই ছিল অপূর্ব। যেখানে জেমস এর নীরব
হাহাকার, প্রেমের আকুতি,অন্যায়ের প্রতিবাদ সব কিছু ফুটে উঠেছে এক অদ্ভুত সুন্দর ভাবে।

১৯৯২ সালেই জেমস ভালোবেসে বিয়ে করেন মডেল ও অভিনেত্রী রথি কে, এবং ২০০১ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরবর্তীকে বেনজীর কে বিয়ে করেন। ১৯৯৩ সালে আবার চুপচাপ থাকা জেমস “ফিলিংস” শ্রোতাদের সামনে নিয়ে আসেন “জেল থেকে বলছি “ অ্যালবাম। মুলত এই অ্যালবাম দিয়ে নতুন দশকের শ্রোতাদের কাছে জেমস ও ফিলিংস এর পরিচয় ঘটে। সেই “জেল থেকে বলছি’ এক ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর করুন অনুভুতি ও আর্তনাদ নিয়ে জেমস তার আসন পাকাপোক্ত করে নেন। তখন ব্যান্ডের কনসার্টে জেমস কে পাওয়া মানে শ্রোতাদের অন্যরকম উম্মাদনা।

১৯৯৫ সালে বের হয় জেমস এর ২য় একক অ্যালবাম “পালাবে কোথায়”। যেটি ছিল এক প্রেমিকার কাছে প্রেমিকের কঠিন প্রশ্ন ! এই অ্যালবাম টিও তখন খুব শ্রোতা প্রিয়তা পায়। জেমস তখন হয়ে যায় “গুরু জেমস”। যেন নতুন যুগের এক কাণ্ডারি। যে কিনা যেমন নাচাতে চায় শ্রোতাদের, শ্রোতারাও তেমনি নাচে। ব্যান্ড শ্রোতারা তখন দুই পক্ষ- একদল “জেমস এর ভক্ত” অন্যদল “জেমসের বিরোধী”। এই অনিবার্য সংঘাত এড়ানোর জন্যই সেই ফেলে আসা ৯৬ তে জেমস আরও একটি চমৎকার উপহার দেন- “নগর বাউল” এলবাম। যেখানে “মান্নান মিয়ার তিতাস মলম” , “আমি এক নগর বাউল”, “আমি তারায় তারায় রটিয়ে দিবো”, “নাগ নাগিনির খেলা” “হুমায়রা নিঃশ্বাস চুরি হয়ে গেছে” এর মত জনপ্রিয় গানগুলো ছিলো।

পর পরে আবার একক অ্যালবাম “দুঃখিনী দুঃখ করোনা”। যা দিয়ে তিনি তাঁর বিপক্ষের ভক্তদের একেবারে লণ্ডভণ্ড করে দেন। সেই অ্যালবামের সবগুলো গান এতোটাই জনপ্রিয় হয় যে তার বিরোধী শিবিরের লোকেরাও সবাই তার ভক্ত হয়ে যায়। বিশেষ করে “যদি কখনও ভুল হয়ে যায়” গানটি জেমস এর সর্বকালের সেরা একটি গানে পরিণত হয়। যে গানে জেমস এর আবেগ এতোটাই ভয়াবহ ছিল যে কোন মানুষের চোখে জল আনতে বাধ্য করতো!

৯০ দশকেই জেমস ও ফিলিংস নিয়ে আসে “লেইস ফিতা লেইস” অ্যালবামটি (যেটি ছিল ফিলিংস নাম নিয়ে সর্বশেষ অ্যালবাম)। যে অ্যালবাম এ “পথের বাপ” “বায়স্কোপ” “সিনায় সিনায়” “হাউজি” “পুবের হাওয়া” “লেইস ফিতা” “নিরান্নব্বই নামে তিনি” সহ সবগুলো গান চরম শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। যার ফলে “গুরু” নামটি জেমসের সাথে পাকাপোক্ত ভাবে বসে যায়। তখন জেমস ছিল অবাধ্য ও বিশৃঙ্খল তরুণদের শান্ত করার এক যাদুকর। জেমস কন্সার্টে আসা আগ পর্যন্ত যে তরুণরা তাকে দেখার অপেক্ষায় উদগ্রীব হয়ে থাকতো, তাদের উদ্দেশে মঞ্চে উঠেই জেমস বলতেন- ”তোরা শান্ত হয়ে যা! আমি এসে গেছি!” ব্যস, সবাই সেই
যাদুকরের কথায় শান্ত হয়ে যেত, আর তার গান গুলোতে ঠোঁট মিলিয়ে গাইত।

তখন গুরু জেমস কে শ্রোতারা যেভাবে পেয়েছিললো এখন তার কোন ছিটেফোঁটাও পায়না। বিশেষ করে সেই সময় জেমস এর ফিলিংস, নগরবাউল ও একক অ্যালবাম ছাড়াও প্রতিটি মিক্সড অ্যালবাম এ গাওয়া গানগুলো! তখনকার সেরা সব গীতিকার যারা ছিলেন, তাঁর মধ্যে- লতিফুল ইসলাম শিবলি, বাপ্পি খান, দেহলভি, আনন্দ, তরুন মুন্সি, মারজুক রাসেল, গোলাম মোরশেদ, প্রিন্স মাহমুদ ও জুয়েল-বাবু, জেমস এর জন্য আলাদা ভাবে গান লিখতেন। যে গানের কথাগুলো ছিল একটার চেয়ে আরেকটা অসাধারণ। যা একবার শুনে মন ভরতো না। শ্রোতারাও দ্বিধায় পড়ে যেতেন কোন গান থেকে কোন গান বেশি সেরা এই নিয়ে আড্ডায় তুমুল তর্ক চলতো। যেটা এখনও চলে।

‘পথের বাপ’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। গানের কথাগুলো যেন রাস্তায় বেড়ে ওঠা অসংখ্য পথশিশুর মনের কথা বলে দেয়।

পথের বাপই বাপরে মনা,
পথের মা’ই মা,
এই পথের বুকেই খুঁজে পাবি
আপন ঠিকানা।

শুধু পথশিশুই নয়, এই গানগুলো যেন আজিজ বোর্ডিংয়ে কাটানো জেমসের সেই নিঃসঙ্গ দিনগুলোর কথাও নীরবে বলে দেয়। ১৯৯৯ সালে বের হয় তার চতুর্থ একক অ্যালবাম ‘ঠিক আছে বন্ধু’। এই অ্যালবামের সবচেয়ে জনপ্রিয় গান এপিটাফ। গানটি শুনলে যেকোনো মানুষের বুকেই নাড়া দিয়ে উঠবে। এছাড়া মীরাবাঈ গানটাও ভীষণ জনপ্রিয়তা লাভ করে। এদিকে ব্যান্ড অ্যালবাম ও একক অ্যালবাম বের করার পাশাপাশি মিক্সড অ্যালবামেও কাজ করা শুরু করেন জেমস। এই মিক্সড অ্যালবামে কাজ করতে গিয়েই প্রিন্স মাহমুদের সাথে কাজ শুরু করেন তিনি। এমনই একটি মিক্সড অ্যালবাম ছিল ‘এখনও দু’চোখে বন্যা’। প্রিন্স মাহমুদের কথা ও সুরে এই অ্যালবামে কালজয়ী একটি গান করেন জেমস। গানটির নাম ‘মা’। মা হারা এক ছেলের ব্যথা যেভাবে এই গানে তুলে ধরা হয়েছে তা শুনলে যেকোনো মানুষই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়বেন।

পরের বছরে প্রিন্স মাহমুদের সাথে আরো একটি হৃদয়স্পর্শী গান উপহার দেন জেমস, নাম ‘বাবা’। হারজিত অ্যালবামের এই গানটিও শ্রোতাদের মনে পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নেয়। অসাধারণ কিছু গান, সাইকিডেলিক রক সাথে অনন্য এক দরাজ কণ্ঠ – সব মিলিয়ে জেমসের জনপ্রিয়তা অন্য এক পর্যায়ে চলে যায়। সেই মাত্রাটা এতটাই উঁচুতে উঠে গিয়েছিলো যে কিছু ভক্তের জীবনের সবকিছুই যেন এই শিল্পী হয়ে ওঠেন। ভালোবেসে ভক্তরা তাকে ‘গুরু’ বলে ডাকতে শুরু করেন। ২০০০ সালে আরেক ইতিহাসের অংশ হন জেমস। বাংলা সঙ্গীতের রাজপুত্র প্রিন্স মাহমুদের কথা ও সুরে ব্যান্ড সঙ্গীতের আরেক লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চুর সাথে পিয়ানো নামের একটি ডুয়েট অ্যালবাম সেই বছরের ডিসেম্বরে মুক্তি পায়। বাংলাদেশের সঙ্গীত ইতিহাসে সেরা ডুয়েট অ্যালবামগুলোর তালিকা করলে একদম উপরের দিকেই এই অ্যালবামটি থাকবে। আইয়ুব বাচ্চুর দুনিয়া, তাজমহল গানগুলোর সাথে গুরু জেমসের বাংলাদেশ, এক নদী যমুনা, তুমি জানলে না গানগুলো এই অ্যালবামেরই ছিল।

এই অ্যালবামটির অভাবনীয় সাফল্য জেমসের ক্যারিয়ারকে কিছুটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেয়, ব্যান্ড দলের সাথে অ্যালবাম করার পরিবর্তে প্রিন্স মাহমুদকে সাথে নিয়ে আইয়ুব বাচ্চুর সাথে ডুয়েট অ্যালবামের দিকে বেশি মনোযোগী হয়ে পড়েন তিনি। ২০০১ সালে মুক্তি পায় নগর বাউলের ‘দুষ্টু ছেলের দল’ অ্যালবামটি। এই অ্যালবামের টাইটেল ট্র্যাক ছাড়াও বিজলী গানটিও ভীষণ জনপ্রিয় হয়।নিজের ব্যান্ড দলের সাথে এটিই ছিল তার শেষ অ্যালবাম।

উপরে উল্লেখিত গানগুলো বাদেও প্রিন্স মাহমুদের সাথে অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন জেমস। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা’, ‘কিছু ভুল ছিল তোমার’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া’, ‘পাপী’ ইত্যাদি। প্রিন্স মাহমুদ ছাড়াও আরো অনেক জনপ্রিয় গীতিকার ও সুরকারের সাথে কাজ করেছেন তিনি। লাকি আখন্দের সুরে ‘লিখতে পারি না কোনো গান’, কবি শামসুর রাহমানের কথায় ‘তারায় তারায়’ আর জুয়েল বাবুর সুরে ‘পদ্মপাতার জল’ আলাদাভাবে উল্লেখ করতেই হয়। ২০০৩ সালে জেমসের পঞ্চম একক অ্যালবাম আমি তোমাদেরই লোক মুক্তি পায়। এই অ্যালবামের ‘সেলাই দিদিমণি’ গানটি গার্মেন্টস কর্মীদের উৎসর্গ করে রচিত হয়।

দিদিমনি নিও তুমি আমার ভালবাসা
তোমার চোখে দেখি আমি রঙিন দিনের আশা

পোষাক শ্রমিকদের হাত ধরে দেশের অর্থনীতির চাকা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথাগুলো কী সহজভাবেই না এই লাইনগুলোতে বলে দেওয়া হয়েছে। গানটি তুমুল জনপ্রিয়তার সাথে সমালোচকদের মনও জয় করে নেয়। ২০০৫ সালে মুক্তি পায় জেমসের ষষ্ঠ একক অ্যালবাম জনতা এক্সপ্রেস। ২০০৬ সালে প্রীতমের সুরে হিন্দি ছায়াছবি গ্যাংস্টারে গান গেয়ে নতুন ইতিহাস গড়েন জেমস। তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’ টানা একমাস টপচার্টের শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছিলো। গানটির জনপ্রিয়তার কারণে আরো অনেক হিন্দি ছবিতে গান গাওয়ার প্রস্তাব তার কাছে আসতে থাকে। সেই বছরেই ও লামহে ছবিতে ‘চাল চালে’ নামের একটি গানেও গলা মেলান জেমস। তবে গানটা তো আজীবন আনন্দের জন্যই গেয়েছেন তিনি, আর হিন্দিতে গান গেয়ে সেই আনন্দটা একদমই পাচ্ছিলেন না। এ কারণেই অনেক প্রস্তাব আসা সত্ত্বেও হিন্দি ছবির প্লেব্যাকে নিয়মিত হননি তিনি।

বাংলা চলচ্চিত্রের প্লেব্যাকে জেমসকে আনার চেষ্টা বহু আগে থেকেই করা হচ্ছিলো। যদিও জেমসের কিছু গান চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়েছিলো, কিন্তু শুধুমাত্র চলচ্চিত্রের জন্য গান গাওয়ার ব্যাপারে তার কিছুটা অনীহা ছিল। শেষপর্যন্ত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক মান্নার অনুরোধে মনের সাথে যুদ্ধ সিনেমার ‘আসবার কালে’ গানটির মাধ্যমে প্রথমবার বাংলা চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন গুরু। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে আটটি বাংলা চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে ‘দেশা আসছে’ গানটির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন জেমস।

২০০৭ সালে জেমসের সপ্তম একক অ্যালবাম ‘তুফান’ মুক্তি পায়। পাইরেসির কারণে ২০০৭ সালের পর থেকেই জেমসের নতুন গান আসায় বিশাল এক ভাটা পড়ে যায়। জেমসের সর্বশেষ একক অ্যালবাম ‘কাল যমুনা’ বের হয়েছিলো ২০০৮ সালে। এরপর আর কোনো একক অ্যালবাম তার বের হয়নি। বিভিন্ন কনসার্ট আর মিউজিকাল শো-তে গান গেয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন জেমস। এছাড়াও জেমস সব শ্রেণীর শ্রোতাদের মনে যায়গা করে নিয়েছে “বাবা”, “মা” “স্যার”, “বাংলাদেশ” “দেখে যারে তুই” “কবিতা” সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গান গেয়ে। জেমসের “পাগলা হাওয়ার তরে” গানটি দেশের জনপ্রিয় গানের দ্বিতীয় স্থানে ছিলো।

জেমস এর আরো অন্যান্য অ্যালবামগুলো-
-ঠিক আছে বন্ধু (একক)
-দুষ্ট ছেলের দল (নগর বাউল)
-আমি তোমাদেরই লোক (একক)
-জনতা এক্সপ্রেস( একক)
-কাল যমুনা (একক)
-তুফান (একক)

আজ ‘জেমস’ বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে অন্য দেশেরও একটি প্রিয় কণ্ঠের নাম। যিনি উপমহাদেশের মাঝে কন্ঠের জোরে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও প্রমাণ করেছেন যে- ভারতের শিল্পীরাই শুধু হিন্দি গানের প্লেব্যাক এ সেরা নয়। সুযোগ পেলে বাংলার শিল্পীরাও কাঁপিয়ে দিতে পারে। একারনেই ‘জেমস’ অন্য সবার চেয়ে আলাদা ও চিরস্মরণীয় একজন। যাকে বাদ দিয়ে কোনদিন বাংলাদেশের পূর্ণ সঙ্গীত ইতিহাস লিখা সম্ভব নয়। কেউ যদি তা লিখার দুঃসাহস দেখায়, আমি নিশ্চিত তার লিখা সেই ইতিহাস কেউ গ্রহন করবে না। আজ ২ অক্টোবর ৫৪ বছর পূর্ণ করে ৫৫-তে পা ফেলেছেন তিনি। এই বয়সেও যেভাবে দাপটের সাথে মঞ্চ মাতিয়ে যাচ্ছেন তা সত্যিই অভাবনীয়। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, “ভক্তদের অসীম ভালোবাসা শক্তি জোগায়। যখন মঞ্চে উঠি তখন মানুষের ভালোবাসার তীব্রতা টের পাই।” ভক্তদের ভালোবাসা সাথে নিয়ে আরো অনেক দিন এভাবেই গুরু আমাদের সুরের তালে মাতিয়ে রাখবেন সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।

-[কিছু তথ্য গুগোল থেকে সংগ্রহীত]